Sunday, August 30, 2009

মাদ্রাসা শিক্ষা ভাবনা

মাদ্রাসা ব্যবস্থা বন্ধ হবে না থাকবে না নিয়ে বিতর্ক আজকের নতুন নয়। কিন্তু হতাশার কথা হচ্ছে ভাড়াটে বুদ্ধিজীবিদের দিয়ে রাস্ট্রের অঘোষিত মালিকেরা এ বিতর্ক চালু করেছে এবং চালিয়েও যাচ্ছে; কখনোই তার অবসান করেনি। একদিকে যেমন ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা সচল রেখেছে, তেমনি বুর্জোয়া-শখ মেটাতে আলাদা রকমের ইংরেজী মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থাও চলছে। আমরা চেয়ে চেয়ে দেখছি। বাঙালি মুসলমানেরা এখন তাদের সন্তানদের জন্য এ দুই শ্রেণীর শিক্ষার পেছনে ছুটছে নিরন্তর। বাংলা মাধ্যমে যত ভালো সিলেবাসই থাকুক না কেন তাতে এখন আর বাঙালির রোচে না। যারা অর্থনৈতিক কারণে পারছে না সে মধ্যবিত্তরাই কেবলমাত্র নিজেদের সন্তানদের এই মধ্যম শ্রেণীর শিক্ষা দিচ্ছে – বাধ্য হয়েই দিচ্ছে; পারলে অন্য লাইন ধরতো।

যাই হোক, ধর্মভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা যে সমাজকে ধীরে ধীরে বন্ধ্যাত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এতে কারো কোন সন্দেহ নেই। মাদ্রাসার ছাত্ররা যতটা না ধর্মজ্ঞান অর্জন করে তার চেয়ে বেশি শেখে পরধর্ম ঘৃনা করা, যতটা না ধার্মিক হয় তার চেয়ে বেশি হয় অসৎ। এর কারণ কি? মৌলিক দু’টো কারণ হচ্ছে, ১) ধর্মকে ব্যবহার করে একদল লোক তাদের ফায়দা হাসিল করতে চেষ্টা করছে আর ২) ধর্মের প্রসারের অত্যাবশ্যক নিয়ামক হিসেবে ধর্ম এসব লৌকিক দুর্বলতাকে মেনেই নিয়েছে। অথচ ধর্মের উদ্দেশ্যই হওয়ার কথা ছিল মানব কল্যান। প্রাচীন ও মধ্যযুগে ধর্মের এইরকম স্ববিরোধীতা খুব একটা অস্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু এই আধুনিক কালে যখন রাস্ট্র স্থিত কাঠামো পেয়েছে, সেখানে এধরনের সাংঘর্ষিক ব্যবস্থা কিছুতেই থাকতে পারে না।

একইভাবে পাশ্চাত্যের অনুকরণে ইংরেজী শিক্ষা ব্যবস্থাও সমাজে আরেকটি প্যারালাল শ্রেণী তৈরি করছে এবং ইতিমধ্যে করেছেও। কথা বাড়িয়ে পাঠকের আর বিরক্তি উৎপাদন করতে চাই না। শুধু দু’টো কথা বলি – এসব অকল্যানকর পদ্ধতি যত দ্রুত বন্ধ হয় ততই মঙ্গল। কিন্তু, যমুনার পানি অনেকদূর গড়িয়ে গেছে। মোল্লা-তাল্লবেলেমরা এখন রিভল্ট করতে শিখে গেছে অন্যদিকে মাথার উপর তাদের ধর্মের অন্ধ পাষান-বোঝা। চাইলেই আর এখন মাদ্রাসা বন্ধ করা সম্ভব না। এ সত্য স্বীকার করে নিয়েই আমাদের সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।

No comments:

Post a Comment