Monday, March 8, 2010

নারীর দিবস, নারী দিবসের নারী

কার জন্য নারী দিবস? শহুরে নারীর? গ্রাম্য নারীর? গৃহবধূ নারীর? শ্রমিক নারীর? কিষাণী নারীর? হিন্দু নারীর? মুসলমান নারীর? বাঙালি নারীর? ইংরেজ নারীর? ভেবে কূল পাই না কোন সে নারী, যার মুক্তির জন্য বিশ্বের দিবস নির্ধারকরা একটা দিন আলাদা করে ছেড়ে দিয়েছেন - কেবল নারীর জন্যই? কেনই বা দিয়েছেন? প্রশ্নটাতো সহজ আর উত্তরও আমাদের জানা - সকল নারীর জন্যই নারী দিবস! দিনরাত মিডিয়া আমাদের এ-ই তো জানিয়ে আসছে।

আসলেই কি তাই? নরসিংদী জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে যে নারী আজ সারাটা দিন তাঁত বুনেছে তাঁর জীবনে এই নারী দিবসের ভূমিকা কী? ঢাকার মধ্যবিত্ত পরিবারের তালাকপ্রাপ্তা মেজ মেয়েটির কোন কাজে এসেছে আজকের নারী দিবসের র‌্যালি? কিংবা গাড়ো পাহাড়ের পাদদেশে যে আদিবাসী নারীটি আজ পেটের জ্বালা নেভাতে মিশনারীদের কুঠিতে গিয়ে মুহুর্তেই খৃষ্টান হয়ে গেল তার অন্তর্দহনের আঁচ কি একটুকুও লেগেছে নারী দিবসের লম্বা শোভাযাত্রার গায়ে?

ভালো করে দেখুন, ঐ শোভাযাত্রার শোভা হয়ে আজ বহুদূর হেঁটেছেন আমাদের এই চেনা শহরের চেনা কোন প্রগতিশীলা নারী! নারীমুক্তির শ্লোগানে শ্লোগানে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেই হয়তো ঝাপিয়ে পড়েছেন তাঁর গৃহের ১২ বছর বয়েসী পরিচারিকার উপরে! সবাই হয়তো তেমন নন, কেউ হয়তো পরিচারিকাকে পেটান না, বরং স্বামীর হাতে প্রায়ই আহত হন, আর সেকারণেই নারী-মুক্তির মিছিলে যোগ দেন। তারপর জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন। ফিরে এসে ভাবেন মুক্তি চাই। এই স্বামীর সাথে এক ছাদের নীচে আর নয়। মনে মনে হিসেব কষেন, দেনমোহরের টাকাটা কীভাবে কাজে লাগাবেন। নিজের পায়ে দাঁড়াবেন। হ্যাঁ, তার দেনমোহর আসলে বেশ অনেকগুলো টাকা। বিয়ের কথাবার্তা ঠিক হবার সময় তাঁর বড়মামা মূলামূলি করে দেনমোহরের অংকটা বেশ বড়ই বাগিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর প্রায় সব বিবাহিত বান্ধবীরই এ নিয়ে ঈর্ষা ছিল।

এভাবে কেটে যায় নারী মুক্তির দিনটি। তারপর আসে আবার আটপৌরে দিন-রাত-সকাল-বিকাল। আবার আগের মতই একটা একটা দিন চলা। সকলে ভুলে যান বিশেষ এই দিনটির কথা। ভুলেন না কেবল ফেয়ার এ্যন্ড লাভলী আর পন্ডস্ এর মত কোম্পানির মার্কেটিং এক্সেকিউটিভরা। কেন? কারণ নারীদিবসটি আসলে ওনাদেরও! কেমন করে? তারাও কী নারীমুক্তির জন্য চিন্তিত? না, তা নয়। বরং নারীকে বন্দী করে রাখতে পারলে তাদের লাভ বেশি।

এবার পাঠক বিরক্ত হবেন নিঃসন্দেহে! বিউটি প্রোডাক্টসের ফেরিওয়ালারা কেমন করে কেনই বা নারীকে বন্দি করে রাখতে চাইবেন! তারাই তো বরং নারীকে মুক্তি দেন কালো রঙের যন্ত্রণা থেকে, ফর্সা করে দিয়ে, কুঁচকানো ত্বক মসৃন করে দিয়ে, পুরুষের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলে! তাঁদের দোষ দেয়া কেন মিছিমিছি! তা বটে! ওঁরা মুক্তি দিচ্ছেন নারীকে গায়ের রঙের হীনমন্যতা থেকে। সাহায্য করছেন পুরুষের সামনে নারীর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে! দেশে দেশে আবার এই সাহায্যের ধরণ আর মাত্রা ভিন্ন। যেমন আমাদের মত দেশে যেখানে মানুষের গায়ের রঙ য়ুরোপীয়দের মত অতটা শাদা নয়, বরং কালোর দিকে - তাদের কানের কাছে সারাদিন ওরা চেচাচ্ছেন কালো রঙ খারাপ কালো, রঙ বিশ্রী, কালো মেয়ে তুমি। এই কালো মেয়ে, তোমাকে হীনমন্যতায় ভুগতে হবে। আর ওদিকে য়ুরোপে এই এঁদের মুখেই আবার অন্য কথা! এই মেয়ে তুমি এত ফ্যাকফ্যাকা শাদা কেন! ইশ তোমার চামড়া দেখছি একেবারে ফ্যাকাশে! এসো আমার কাছে এসো, গোপন দাওয়াই আছে! এর নাম ট্যানিং! আরো একটু কড়া হোক তোমার ত্বকের রঙ! দেখো কি সেক্সি দেখাচ্ছে তোমাকে!

আহ নারী-মুক্তি! নারী তোমার মুক্তি হবে কোথায়, কোন মহাদেশে গেলে!

Monday, February 22, 2010

তিরিশ মিনিটে ‘দুনিয়া কেঁপেছে’, আমরা কেঁপে উঠবো কবে?

প্রথমআলো-গ্রামীণফোনের এই ঘটনাটা কি একেবারে বিচ্ছিন্ন কিছু? মোটেও না। বাংলাদেশটার উপরে ভালো করে দৃষ্টি ফেলুন, দেখবেন এই ঘটনা প্রতি মুহুর্তে ঘটছে। কেবল মিডিয়া কোম্পানীগুলোই কি এসব করছে? না, মিডিয়ার কর্মকান্ড আমাদের চোখে পড়ে বেশি, তাই এ নিয়ে আলোচনাও বেশি হয় - অন্যরা আমদের সাদা চোখকে ফাঁকি দিয়ে যায়! লক্ষ্য করুন, '৯০ দশকে এনজিও ভিত্তিক একধরণের কৃত্রিম চাকরিবাজার তৈরি করা হয়। তখন যারা এর ক্ষতিকর ফলাফলের কথা বলেছিল, তাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করা হত "এরা বামপন্হী, এরা উন্নয়ন চায় না" এসব কথা বলে! এখনও দেখবেন, বাম-ভাম-ডান এধরণের কথার প্রচারের চেষ্টা চলছে। তারা নষ্ট করেছে আমাদের রাজনৈতিক সচেতনতা

তারপর, শুণ্য দশকে এসে জোয়ারের মত এল টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলো, তৈরি হল আরেক ধরণের চাকরি-বাজার। রাজনৈতিক অস্হিরতা এবং তার ফলশ্রুতিতে অর্থনৈতিক স্থবিরতা; এই সুযোগে মোটা বেতনের চাকরী, বড়লোকি চক্করে চলাফেরার সুযোগ - এই কৌশলে তারা দখল করে নিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া প্রায় প্রতিটা মাথা। এদের হাতেই নির্মিত হলো আরেক প্রজন্ম - ডিজ্যুস! নিত্য নতুন গ্যাজেট, ডিজে পার্টি, ড্রাগস আর আনলিমিটেড সেক্স - চমৎকার আফিম গুঁজে দেয়া হলো এদের হাতে! বাংলাদেশে তৈরি হলো ভিন্ন কোন এক গ্রহের মিনি সংস্করণ। কেউ আমরা চিনতে পারছি না এরা কারা! এরা কি করছে! এফ এম রেডিও চ্যানেলগুলো যেন চালু হলো কেবলমাত্র ডিজ্যুস জেনারেশনের জন্যই! এদের আরজে'দের একটাই কাজ - বাংলা শব্দকে ভেঙচানো। ইংরেজির আদলে বাংলার সকল 'ব' শুণ্য 'র', হয়ে গেল 'ড' শুন্য 'ড়'! আমাড় প্ড়িয় লিসনাড়্স, হা'উজ গঔইং? এরা আমাদের রাজনৈতিক অসচেতন জনগোষ্ঠীকে আফিম খাওয়াচ্ছে!

এখন আর বলা যায় না, "যাচ্ছে যাচ্ছে সব যাচ্ছে", এখন বলতে হয় সব এদের দখলে চলে গেছে! দেশপ্রেম নিয়ে কাদের কর্মকান্ড সবচেয়ে বেশি? পুঁজির মালিকদের। কাদের ভাষা-প্রেম দরিয়ার মতো উছলে পড়ছে? পুঁজির মালিকদের। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কাদের উচ্ছাস সবচেয়ে বেশি? পুঁজির মালিকদের। সংস্কৃতি নিয়ে কারা সবচেয়ে বেশি আপ্লুত? পুঁজির মালিকরা। আমরা নিজেদের অজান্তে তাদের হাতে তুলে দিয়েছি আমাদের ভাষা-মুক্তিসংগ্রাম-ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি-মূল্যবোধ। একবারও ভেবে দেখার সুযোগ পাইনি, তাদের কী দায় পড়েছে এসবে তাদের পুঁজি লগ্নি করবার? ভেবে দেখলে দেখতে পেতাম, তাদের একমাত্র লক্ষ্য মুনাফা! মুনাফার লোভে এরা এখন তিরিশ মিনিটে দুনিয়া কাপানোর ঢং করছে, তেমনি মুনাফার প্রয়োজনেই তারা গণধর্ষন করবে এই আমাদের ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে। প্রমান চান? ডিজ্যুস জেনারেশন আপনার চোখের সামনেই আছে। এখনো সময় আছে, জেগে উঠুন, প্রতিরোধ করুন এই দানবকে

Thursday, November 12, 2009

নির্লজ্জ বার্লিন উৎসব মনে করিয়ে দেয় পুঁজির সর্বগ্রাসী বিভৎসতা

টিভিতে কাল দেখছিলাম বার্লিন প্রাচীর ভাঙার ২০ বছর উপলক্ষ্যে বিপুল আয়োজন। পুঁজিবাদী দেশগুলোর চীফ এক্সেটিউটিভরা একত্র হয়েছেন, তালে তালে শরীর দোলাচ্ছেন, অসংখ্য মানুষও জমায়েত হয়েছে। সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ! উদযাপন চলছে, বিশ্বনেতারাও করছেন, আমজনতাও করছে - সবাই কী যেন একটা উদযাপন করছে! মোড়লদের চোখে মুখে অদ্ভুত মিশ্র রকমের হাসি! যেন বলছে দেখ দেখ, সাম্যবাদ পচা পুজিবাদ লক্ষ্মী। আমরা পূর্ব জার্মানি থেকে পচা সাম্যবাদ দূর করেছি, তার বদলে দিয়েছি আমাদের কোকাকোলা সাথে অবশ্য দিয়েছি খানিকটা বেকারত্ব, বেশি না এই মাত্র সাড়ে ৩ মিলিয়ন মানুষ চাকরি হারালো বার্লিন প্রাচীর ভাঙার মাত্র ৩ বছরের মধ্যেই।

বেকারত্ব? হ্যাঁ ভালো জিনিস পেতে গেলে খানিকটা অসুবিধা তো ভোগ করতেই হবে, তাই বেকারত্বটুকু মেনে নাও বাপু। তার বদলে পূর্ব জার্মানি ভালো কী-টা পেয়েছে? এটা আবার জানতে চাও কেন, নিজে বোঝনা? স্বাধীনতা পেয়েছো তোমরা স্বাধীনতা। স্বৈরাচারী সাম্যবাদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছো, এসেছে স্বাধীনতার প্রতীক পুঁজিবাদ! এখন তোমার যার ইচ্ছা তার অধীনে কাজ করতে পারবে। পাবলিক বুঝলো উল্টো, অর্থাৎ এখন যার ইচ্ছা আমাদেরকে শোষণ করতে পারবে! এবং শোষিত মুনাফার বদলে আমাদের ভালো-মন্দের কোন দায় সে নেবে না, যেমন নিত স্বৈরাচারী পূর্ব জার্মান রিপাবলিক।

২০ বছর পরে এসে হিসেব কযে দেখা যাচ্ছে বার্লিন দেয়াল ভেঙে পূ্র্ব জার্মানীর জনগণের আসলে কোনই ফায়দা হয়নি হয়েছে। যা হয়েছে তা কেবল পশ্চিম জার্মানীর এবং অনিরমেয়ভাবে বিশ্ব-পুঁজির একচ্ছত্র মালিকদের। ৯০ সালে একীভূত জার্মানীর চ্যান্সেলর হেলমুট কোল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অচিরেই পূর্ব জার্মানী এক 'ফ্লুরিশিং ল্যান্ডস্কেপে' পরিনত হবে। বাস্তবে ঘটেছে ভিন্ন। উদাহরণ দিলে আরেকটু পরিষ্কার হবে, পূর্ব জার্মানীর হেল (Halle in Saxony-Anhalt) শহরের রাসায়নিক কারখানায় ১ লাখ চাকরী ছিল দেয়াল ভাঙার আগের দিনও, আজ তা ১০ হাজারে এসে ঠেকেছে। দুই জার্মানির সম্মিলিত বেকারত্বের হার এখন প্রায় ৮ শতাংশ কিন্তু পূর্ব জার্মানীর একক বেকারত্বের হার ১২ শতাংশের ওপরে। অথচ তথাকথিত 'স্বৈরাচারী' জার্মানীতে এই হার ছিল দৃশ্যত শূণ্য!

স্বাধীনতাই পেয়েছে পূর্ব জার্মানির জনগণ - আগে দেশ ছাড়তো স্বৈরাচারী পুলিশের ভয়ে, এখন পালায় বেকারত্বের থাবা থেকে বাঁচতে। একে পুঁজিবাদী বিশ্বমোড়লরা যতই স্বাধীনতা বলুক না কেন পূর্বজার্মানীর জনগণ তা মনে করে না। তাই তো Der Spiegel পত্রিকার ভোটাভুটিতে দেখা যায়, ৭৩ শতাংশ জনগণ মনে করে পুঁজির বিরুদ্ধে কার্ল মার্ক্সের দর্শণই এখনো সঠিক। ২০০৮ এ এসে মার্ক্সের পুঁজি ('ডাস ক্যাপিটাল') বিক্রির পরিমান ২০০৭ এর তুলনায় তিনগুন বেড়েছে। এমনকি পুঁজির সর্ববৃহৎ পোষক ব্যংকের কর্মকর্তারাও পড়ে দেখছে ব্যাটা মার্ক্স কি এমন লিখেছিল।

বার্লিন দেয়াল ভেঙে ফেলতে মানুষের ঐক্য ছিল সত্য সাথে সাথে এও সত্য যে 'স্বৈরাচারী' বলে যাকে উড়িয়ে ফেলেছে পুঁজিবাদি বিশ্ব সে রেজিমেও সম্ভব ছিল মানুষের পক্ষে একত্র হয়ে পরিবর্তনের জন্য দাঁড়নো। কিন্তু পুঁজির প্রবল তোড়ে এখন মানুষ খড়কুটোর মত ভেসে যাচ্ছে সারা পৃথিবীব্যাপী, থামানোর যেন কোন উপায়ই নেই। মানুষের পক্ষে যেন সম্ভবই হচ্ছে না ঐক্যবদ্ধ হওয়া। তাই, গাজায় দেয়াল উঠছে, ইরাকে দেয়াল উঠছে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে নির্যাতিত হচ্ছে মানুষ। লাভের গোলাটা ভরছে কেবল পুঁজির মালিকদের, বাকি সবাই তাদের কেনা গোলাম মাত্র।

http://www.somewhereinblog.net/blog/proshnoblog/29041444

Tuesday, September 15, 2009

শাহ আব্দুল করিম ও বাউলসম্রাট বিতর্ক

শাহ আব্দুল করিম নিঃসন্দেহে বাংলা লোকসংগীতে অমূল্য অবদান রেখে গেছেন। হাওড়ের জলের ধ্বনি, কাঁদা-মাটির গন্ধ আর মানুষের বিবিধ জীবনাচরণের নানামুখী দার্শনিক উপলব্ধিতে সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা চিরায়ত সাহিত্যধারাকে। তাঁর অবদানের প্রতি জানাই অকৃত্রিম শ্রদ্ধা।

বাউলধর্ম বাংলা লোকধর্মের বিস্মৃতপ্রায় অবশেষ। গাঙ্গেয় ব-দ্বীপে বারে বারে বিদেশি শক্তি এসেছে, সাথে নিয়ে এসেছে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজধর্ম প্রতিষ্ঠায় তারা আক্রমণ করেছে অঙ্গ, বঙ্গ, গৌড়ের লোকায়ত ধর্মবিশ্বাসকে, ফলে তা বিবর্তিত হয়েছে। এই বিবর্তনের ধারায় সুস্পস্ট দু’টো বড় ঢেউ লেগেছিল বৌদ্ধধর্মাবলম্বী পাল আমলে এবং তারপর শেষটি লেগেছিল মুসলিম শাসনামনে। মাঝখানে হিন্দু শাসনামলে অবশ্য পরিবর্তনের ধারা স্তিমিত হয়েছে বলেই অনেকে মত দেন, কেননা তখন লোকধর্ম ছিল তীব্র আক্রমণের মুখে। ফলে বিকাশের বদলে তা অনেকটা মিইয়ে গেছে।

মুসলিম শাসনামলের শুরুতেই বাউলধর্ম আবার বদলাতে শুরু করে। পারস্যের মুসলিম সূফিদের আগমনে বাংলায় একধরণের পারসিক-আরবী ভাববাদের বিকাশ শুরু হয়। রাজধর্ম ইসলাম হওয়ার পরে তা অতি দ্রুত বিস্তার লাভ করে। বাউলদের মাঝেও এর ছোঁয়া লাগে। বাউল দর্শনে স্থান পায় আল্লাহ-নবী বিশ্বাসের ভেদ নির্ণয়ের আলোচনা। কিন্তু তাতে বাউলের দেহতত্ত্ব বদলায়নি মোটেও, বরং আরও গভীর ও সমৃদ্ধ হয়েছে। পর্তুগীজ ও ইংরেজদের আগমনে বাংলায় খ্রীষ্টধর্মেরও খানিকটা প্রভাব পড়ে, তবে তা বাউলধর্মকে খুব একটা প্রভাবিত করতে পারেনি। উপরন্তু বাউলরা খ্রীষ্টদর্শনকে ব্যবহার করেছে বিভিন্ন একেশ্বরী দর্শনকে খারিজ করতে। লালনের গানে বারে বারে এসেছে ইসলামের সাথে খ্রীষ্ট দর্শনের তুলনা যা তুলে ধরেছে একেশ্বরী দর্শনের সীমাবদ্ধতা।

সংক্ষেপে, বাউলধর্ম বাংলা লোকধর্মের ধ্বংসাবশেষ। বাউলধর্মে পরকালের কোন স্থান নেই। বাউল হতে গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে দীক্ষা নিতে হয়; নিগূঢ় দেহতত্ত্বের সাধনায় বাউল তার জীবন ব্যয় করে। দীক্ষা এককভাবে বা সাধনসঙ্গীকে নিয়ে যৌথভাবে নেয়া যায়। সাধনসঙ্গী ব্যাতীত বাউলসাধনা অপূর্ণ থাকে। দীক্ষা শেষে বাউল হন 'জ্যান্তে মরা'। এটি দেহত্ত্বের সাধনার গুরুত্ত্বপূর্ণ একটি স্তর; বাউল হতে হলে সকলকেই এই স্তর পার হয়ে আসতে হয়। এ প্রসঙ্গে প্রফেসর আনোয়ারুল করিম বলেন:

A Baul is not born, he is made. If anyone is willing to accept the Baul faith, he or she is inducted into the Baul cult after being properly initiated by the Baul Guru. When a Baul is initiated, a ceremony is arranged for him or her or for the couple who are initiated jointly, by other Bauls. Woman or female plays the most vital part in Baul cult. Without woman partners the cult loses its significance. Woman is also considered a ' chetan guru' or one who is awaken or conscious of all activities in the cult.

Here the persons to be initiated undergo certain process or rituals with the guru that is never disclosed to others. On the following day, the couple is taken to a purifying bath either to a river or in a pond. A 'khilka' is a new white cloth which stands as the symbol of 'kafaon' as used by the Muslims for a burial cloth and is given to the couple who undergo initiation process with this end in view that the persons who are being initiated are also taken as dead to the life which they led previously.

They are now considered dead while still living . In Baul terminology, it is taken as 'jyante-mora'. The initiating couple then taken to the shade of a big 'chadoa' or cover which is held by four persons, of them, two are women taking the four corners of the 'chadoa' or shed while the others who are already initiated help the initiating couple dress in a 'khilka'.The male initiate is then covered with a 'pagree' or turban. Underneath his outer garments the initiate is then made to wear a very tight-fitting underwear or a catche-sexe known as 'dor-kowpin' or 'kapni'.It is a tiny loin cloth worn by the ascetics of India and Bangladesh.


যা-ই হোক, যদিও আকাঙ্খিত নয়, তথাপি একটি বিতর্ক এখানে রয়ে যায় - শাহ আব্দুল করিমকে বাউল বলা কতটা যুক্তিসঙ্গত? যদিও তাঁর গানে দেহতত্ত্ব ব্যপকভাবেই স্থান পেয়েছে, তবুও বাউল দর্শন কতখানি তিনি ধারণ করতেন সে ব্যাপারে প্রশ্ন রয়ে গেছে। ৬০ এর দশকে তিনি বেশ পরিচিত হয়ে ওঠেন গণসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে। প্রখ্যাত রাজনীতিবিদদের সভার এক পর্যায়ে গণসঙ্গীত পরিবেশনা একসময় কাস্টোমারি ছিল। সে সময়টাতে তিনি প্রচুর গণসঙ্গীত রচনা করেছেন, গেয়েছেন। ড. মৃদুল কান্তি চক্রবর্তী তাঁকে প্রতিবাদী গণসঙ্গীতশিল্পী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

তিনি কমুনিষ্ট রাজনীতিবিদদের সংস্পর্শে এসে সাম্যবাদী চেতনায় সমৃদ্ধ হয়েছেন, এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে কমরেড বরুন রায়ের কথা বলতে হয়। যদিও করিমতিনি স্পস্ট করেই বলেছেন তিন কমুনিষ্ট নন, অথবা নাস্তিকও নন; তিনি পরকালে বিশ্বাসী। এসময় অসাম্প্রদায়ীক মৌলিক গান রচনা করে তিনি বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। আত্মনিমগ্ন বাউল সাধক না হয়ে তিনি বেছে নিয়েছিলেন সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রতিবাদের পথ। তাঁর সঙ্গীত জীবনের সাথে আষ্ঠে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে সমাজ সচেতনতা। এমনকি তিনি জনসংখ্যা রোধে সচেতনতামূলক গানও রচনা করেছেন।

হাওড় অঞ্চলের লোকসংগীতের যে ধারা সেটি কি বাউলস্রোতে মিশতে পেরেছে? কিংবা চেয়েছে? সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ইত্যাদি এলাকার গান স্বমহিমাতেই উজ্জ্বল। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় হাসন রাজা কিংবা উকিল মুনশীর গানের কথা। এঁদের সকলের গানই বাণী, সুর বিষয় বৈচিত্রে বাংলা লোকসংগীতের অমূল্য সম্পদ। কিন্তু বাউল গান, দর্শনও ধর্মের সাথে তাদের সরাসরি কোন যোগ নেই। সেটি প্রকৃত অর্থেই আরেকটি ধারা। তাই বাউলসম্রাট বিশেষণ দিয়ে শাহ আব্দুল করিমকে মহিমান্বিত করার বিশেষ কোন দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না। তিনি স্বমহিমাতেই ভাস্বর।

Thursday, September 3, 2009

আমি খুনী, ধর্ষক, চাদাঁবাজ, ডাকাত, গুন্ডা! আমার নামে মামলা হোক

আমি খুনী, ধর্ষক, চাদাঁবাজ, ডাকাত, গুন্ডা! আমার নামে মামলা হোক। মামলা আদালতে যাক। বিচারক রায় দিক আমার ফাঁসি হোক। মাথা পেত নেব।


কিন্তু বিনা-বিচারে আমাকে হত্যা করার কী অধিকার আছে রাষ্ট্রের? এই রাষ্ট্রের জন্য কি লড়াই করেছিল আমার আগের প্রজন্ম? একই রাষ্ট্রে বাংলা ভাইয়ের বিচার হবে কিন্তু ডা. টুটুলকে রাষ্ট্র খুন করবে বিচার ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে? কেন?

বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি-ই কি এদেশের ১৫ কোটি মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু নয়?

বিচার ব্যবস্থার আওতার বাইরে যত শতশত নাগরিককে হত্যা করেছে রাষ্ট্র তার পূর্ণ খতিয়ান চাই। প্রতিটি হত্যার যথাযথ তদন্ত ও বিচার চাই।

রাষ্ট্রকে আজ দাঁড় করালাম বিচারের কাঠগড়ায়।

Sunday, August 30, 2009

রাষ্ট্রের হাতে যদি নাগরিক নিরাপত্তা না পায় তবে সেই রাষ্ট্র ব্যর্থ

কথায় আছে, বাঘে ছুলে হয় আঠরো ঘা আর পুলিস ছুলে ছত্রিশ ঘা! পুলিসের মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি করা এরকম একটি কথা নিশ্চয় একেবারে অকারণে তৈরি হয়নি। এর উত্তরে পুলিসের ভাষ্য হচ্ছে, এটি চালু হয়েছে ব্রিটিশ আমলে – যখন স্বদেশি বিপ্লবীদের ধরার নামে পুলিস যাকে-তাকে ধরে অমানুষিক নির্যাতন চালাতো। বাঘের ভয়কেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল তখন পুলিসের ভয়। ঠিক আছে, ব্রিটিশ আমলের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম – তারা ভিনদেশি শত্রু ছিল, কিন্তু এই স্বাধীন বঙ্গদেশে যে হাজারে-বিজারে মানুষ মরছে পুলিস আর তাদের মাসতুতো ভাই র‌্যাবের হাতে, তা-ও আবার বিচার ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, তার কি ফয়সালা হবে? এটি কি আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের অস্ত্র ও ক্ষমতার অপব্যবহার নয়?

এটি যে অস্ত্রের ও ক্ষমতার অপব্যবহার, পুলিসের আইজি নূর মোহাম্মদ সাহেব কিন্তু তা স্বীকার করতে নারাজ। ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টারকে সপ্তাহ দুয়েক আগে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি আরো দাবী করেছেন যে পুলিস বা র‌্যাবকে অস্ত্র দেয়া হয়েছে ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য। তারা সেটাই করছে, নিরপরাধ কাউকে তারা খুন করছে না। তিনি আরো বলেছেন যে, ক্রসফায়ারে মানুষ খুন হওয়া এদেশে নতুন কিছু নয়, কিন্তু তাতে নিরপরাধ কেউ কখনোই খুন হয়নি।

যাক, পুলিসের হাতে যে মানুষ মারা যাচ্ছে সেটা অন্তত তিনি অস্বীকার করেননি। সাথে সাথে বেশ ক’টি বেয়াড়া প্রশ্নও এল মনে। নূর মোহাম্মদ সাহেবের কথায় নিশ্চিত হলাম যে পুলিস যাদের মারছে তারা ‘ক্রিমিনাল’। প্রশ্ন হচ্ছে, কে তাদেরকে ক্রিমিনাল বলে এই রায় দিল? কোন আদালত? জানা মতে কোন আদালত সেই ‘ক্রিমিনালদেরকে’ ক্রিমিনাল বলে সাব্যস্ত করে রায় দেয়নি। হয় কোন মামলার আসামী হিসেবে পুলিস তাকে ধরতে চেষ্টা করছিল, বা সে পুলিসের হাত থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তার অপরাধ তখনো প্রমাণিত হয়নি। অথচ আইজি সাহেব তো বলছেন, নিরপরাধ কাউকে তারা খুন করেন না! তাহলে ধরে নেয়া যায় যে, পুলিস বা র‌্যাবের সদস্যরা নিজেরাই ঠিক করে নিচ্ছেন কে ক্রিমিনাল আর কে নয়! আইজি সাহেবের কাছে সবিনয়ে জানতে চাই, আইনগতভাবে আপনাদের কি সেই এখতিয়ার আছে? তাহলে আইন-আদালত-বিচার ব্যবস্থা একেবারে উঠিয়ে দেয়া হোক, কি বলেন?

এ প্রসঙ্গে আরো একটি কৈফিয়ত ইদানিং বেশ জোরেশোরে শুনা যাচ্ছে – পুলিস বা র‌্যাব আত্মরক্ষার্থে ‘অপরাধীদেরকে’ হত্যা করতে বাধ্য হয়। হক কথা, আত্মরক্ষা করার অধিকার প্রতিটি মানুষের আছে, চাই কি সে চোর হোক কিংবা পুলিস। মুশকিল হলো, পুলিস যদি আত্মরক্ষা করতে পারে তাহলে পুলিসের তাড়া খাওয়া ‘ক্রিমিনালটি’ কেন পারবে না? সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এখন এই কথা শুনে তেড়ে না এলেই হয়। কিন্ত আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, র‌্যাব বা পুলিসের হাতে নিহত হওয়া ‘ক্রিমিনাল’দেরকে কেন পায়ে বা শরীরের অন্য কোন আপাত নিরাপদ অঙ্গে গুলি না করে মাথায় বা বুকে গুলি করা হয়? আমাদের এলিট ফোর্স র‌্যাব বা পুলিশ কি তাড়াহুড়োয় ঠিকঠাক মতো লক্ষ্য স্থির করে মানে সই করে গুলি করতে পারে না? তাহলে তো ভীষণ চিন্তার কথা! পুলিশ ভাইয়েরা করিমকে গুলি মারতে গিয়ে রহিমকে গুলি করে ফেলবে আর সুশীল সমাজ তা চেয়ে চেয়ে দেখব তা তো হতে পারে না! পুলিসের উন্নত প্রশিক্ষণের দাবীতে এখনই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হোক। নইলে অশীল সন্ত্রাসী মারতে গিয়ে র‌্যাব যে সুশীল ভদ্দরলোকেদের ক্রসফায়ারে হত্যা করবে না তার কোন গ্যারান্টী কে দিবে।

ক্রসফায়ারের কথা যখন এলই, আরো দু’চারটি কথা বলা আবশ্যক। ক্রসফায়ার জিনিসটা যে আদতে কী আজও ঠিকঠাক মত বুঝে উঠতে পারিনি। বাংলায় এর কোন প্রতিশব্দও খুঁজে পাইনি। তবে সাধারণভাবে মনে হয় যে, দুই বা ততোধিক পক্ষের গোলাগুলির মাঝে কেউ (যে কোন এক পক্ষের বা একেবারে পক্ষনিরপেক্ষ) পরে গেলে সে ঘটনাটিকে ক্রফায়ার বলা যেতে পারে। তা-ই যদি হয়, তবে র‌্যাবের হাতে যারা খুন হয়েছে তার কোন কোন পক্ষের গোলাগুলির মাঝে পরেছিল? এক পক্ষ তো র‌্যাব, যারা মরছে তারা সাধারণত র‌্যাবের বন্দী, তাদের কাছে অস্ত্র থাকার প্রশ্নই উঠে না। তাহলে অন্য পক্ষ কে বা কারা? পত্রিকায় প্রায়ই একঘেয়ে রিপোর্ট দেখি – ভোর রাতের দিকে র‌্যাব বন্দীকে নিয়ে গিয়েছিল অন্য ‘ক্রমিনালদের’ আস্তানা চিনিয়ে দিতে। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্য সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়তে শুরু করলে র‌্যাবও পাল্টা গুলিতে জবাব দেয় এবং অবধারিতভাবে দুই গোলাগুলির মাঝে গিয়ে হাজির হয় বেচারা মরণগামী ‘ক্রিমিনাল’। এই ধরণের রিপোর্ট পড়তে পড়তে প্রায়ই ভাবি রিপোর্টগুলো আসলে কারা লিখেন? পত্রিকার রিপোর্টার নাকি র‌্যাবের কোন কর্মকর্তা? কে জানে হয়তো বাড়তি সৎ-উপার্জনের জন্য অনেক র‌্যাব সদস্য পত্রিকাতেও পার্ট-টাইম চাকরি করেন। সে যাক, র‌্যাবের সদস্যরা যদি পত্রিকায় পার্ট-টাইম চাকরি করেন সেটা নিশ্চয়ই সংবিধান লঙ্ঘন করে না! ছোট দু’টো প্রশ্ন রেখে আজকের মত শেষ করব। এক: বন্দীকে নিয়ে সন্ত্রাসীদের ডেরায় হাজির হওয়ার পেছনে র‌্যাবের উদ্দেশ্যটা আসলে কি? ঠিকানা চিনিয়ে দেয়াই যদি উদ্দেশ্য হয় তবে, সেই ঠিকানাটা কি বন্দী মুখে বলতে পারত না? নাকি র‌্যাবের হেফাজতে ততক্ষণে তার বাকশক্তির বারোটা বেঝে গেছে – এই সন্দেহটাকে পাত্তা দেব? দুই: এভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে নিহত হওয়া মানুষদের জন্য সংবিধানে কি কোন বিধান আছে? তারা যেহেতু নিরাপত্তারক্ষীদের ভাষ্যে ‘ক্রিমিনাল’ তাই তাদের মৃত্যু উচিৎকাজ হয়েছে ভেবে আমাদের কি উচিৎ বগল বাজানো? নাকি সংবিধান যেহেতু প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে, তাই এদের মৃত্যুকে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা সাব্যস্ত করে রাষ্ট্রের কাছে কৈফিয়ত দাবী করা উচিৎ?

টিপাইমুখ বাঁধ-বিরোধী আন্দোলনঃ ল্যাম্পপোস্টের দুঃসাহসী অগ্রসৈনিকদের সমর্থনে গণসঙ্গীত

সূর্যের গান বন্ধু তোমার হাতে
জ্বালাও শ্লোগান তুমি অন্ধ এই রাতে

শোষণের কারাগারে ছিন্ন সময়
ঐকতানে বাঁধি এসো মানুষের জয়
আগুনের চোখ মেলে দাঁড়াও প্রভাতে

ঘুম ঘুম চোখে দাও সূর্যস্নান
ভবঘুরে পায়ে দাও মুক্তির শান
প্রতিঘাত জেনে নাও প্রতিটা আঘাতে।

সূর্যের গান

Get this widget | Track details | eSnips Social DNA

গানটি লিখেছেন সামহয়্যারইন ব্লগের নির্ঝর নৈঃশব্দ্য এবং সুর করেছেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য্য। রচয়িতা গানটি নিবেদন করেছেন টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ প্রতিরোধে আন্দোলনরত দেশ-বিদেশে অবস্থানরত প্রতিটি দেদীপ‌্যমান বাঙালির সমুখপদক্ষেপে।